Tuesday, March 29, 2022

মেয়ের মাঝে মাকে আজও খুঁজি

 মা বেঁচে থাকলে মনে হয় এমনই হতো!!


প্রত্যেকে সন্তানেরই মায়ের কোলে মাথা রেখে বড় হতে ইচ্ছে করে আমিও তার ব্যতিক্রম ছিলাম না। কিন্তু ভাগ্য আমাকে ব্যতিক্রম এর কাতারে ফেলে দিয়েছে সেই ছোট বেলাতেই। 


আমি পরিবারের বড় ছেলে আমার পরে আরও পাঁচ জন তার মধ্যে সবার ছোট ভাইয়ের বয়স ছিল মাত্র ছয় মাসের। এক কথায় কেউ কাউকে দেখার বয়স তখন পর্যন্ত কারোরই হয় নাই। 


কিন্তু ভাগ্যের নির্মম পরিহাস আমাকে মেনে নিতে হয়েছিল সেই ছোট বেলাতেই। বয়স তখন এ আর এমন কি হবে? সবে মাত্র সপ্তম শ্রেণিতে উঠেছি। হঠাৎই একদিন আমরা তিন ভাই, তিন বোনকে রেখে আমার মা সবাই কে কাঁদিয়ে চলে গেলেন না ফেরার দেশে।


এর মধ্যে মা যে মারা গেছেন ছোট তিন ভাই বোনের কিন্তু বুঝারই জ্ঞান হয়নি।


মা মারা যাওয়ার পর আমার ১০৫ ডিগ্রি জ্বর হয়েছিল। পাঁচ দিন প্রায় অচেতন ছিলাম। শুধুমাত্র এইটুকুই মনে আছে আমার কাছের যারা ছিল তারা আমাকে বলেছিল বাবারে কষ্ট করে পাঁচ টা দিন পাড় কর তারপর আল্লাহই রহমত দিবে। তার উপর আবার তুমি ছয় জনের মধ্যে সবার বড়। তোমাকে ধৈর্য ধারণ করতে হবে তোমার ছোট ভাই বোনের দিকে তাকিয়ে । আল্লাহ তোমাকে ধৈর্য ধারণের সাহস যোগাবে।


ওনাদের কথা কিন্তু সেদিন সত্যি হয়েছিল। আল্লাহ আমাকে পৃথিবী সমান ধৈর্য দান করেছেন। 


আমরা সবাই ছোট ছিলাম বলে আমার নানু নিজ হাতে আব্বাকে বিয়ে করালেন। বর্তমান মায়ের এক মেয়ে আছে।


আমার সৎ মা অসম্ভব ভাল ছিলেন এটা বুঝানোর জন্য একটি কথাই কিন্তু যথেষ্ট। আর তা হলো একজন কুমারী মেয়ে হিসেবে সেই দিন আমাদের তিন ভাই ও তিন বোন কে নিজের সন্তানের মতো বুকে টেনে নিয়েছিলেন আর কিন্তু ছাড়েন নি।


যার ফলশ্রুতিতে আমরা ভাই বোন সবাই আলহামদুলিল্লাহ অনেক ভাল আছি।


সব কিছুর পরেও এক ধরনের চাপা কষ্ট কিন্তু থেকেই যায়।


আল্লাহর রহমতে আজ আমার চাপা কষ্ট আমার মেয়েকে পেয়ে কখন যে ভুলে গেছি টেরই পাইনি।


আমি আমার মেয়ের মাঝে আমার হারিয়ে যাওয়া মাকে খুঁজে পেয়েছি। সত্যিই মা বেঁচে থাকলে মনে হয় এমনই হতো।


ফারুক আহমেদ 

ময়মনসিংহ।

নারী

 নারী তুমি ছ্যাকা দিলেই ছলনাময়ী আবার মা হলেই মমতাময়ী!


নারী তুমি জন্ম নিলেই মেয়ে, বিয়ে হলেই বউ আবার সন্তান হলেই মা। সব জায়গায় যদি নিজের বিবেক বুদ্ধি কাজে লাগিয়ে ভাল মন্দের হিসেব করে চলতে পারো তবেই তুমি আদর্শ নারী।


নারী তুমি বউ হয়ে ভালোবাসলে পৃথিবীর সব সুখ পাওয়া যায়। আবার তুমি দুঃখ দিলে সাগরের পানিও যেন কম পড়ে যায়।


নারী তুমি চাইলে হাসাতে পারো আবার কাঁদাতেও জুড়ি মেলা ভার!


নারী কারো কাছে মহান, কারো কাছে ছলনাময়ী, কারো কাছে মমতাময়ী আবার কারো কাছে রহস্যময়ী।


কেউ কেউ বলে 

নারী নাকি যেখানে যেমন রঙ ধরে তেমন!


আমার কাছে মনে হয় নারী মেয়ে হয়ে মায়ের অভাব দূর করে, বউ হয়ে সুখ দুঃখের সাথী হয়ে পাশে থাকে আবার মা হয়ে মমতার চাদরে ঢেকে রাখে।


ফারুক আহমেদ 

ময়মনসিংহ।

Monday, March 28, 2022

 যে কোন সম্পর্কের মাঝে মান অভিমান হতেই পারে। এখন কথা হলো এই মান অভিমানের পর্ব কে কিভাবে সমাধান করবো? কতটা সময় নেব?

এটা যার যার একান্তই ব্যক্তিগত বিষয়। তবে এই বিষয়টিকে আমি একটু ভিন্ন ভাবে চিন্তা করি। আমার কাছে মনে হয় জীবনটাই ক্ষণিকের, তাই তো যথাসম্ভব দ্রুততার সহিত মান অভিমান এর পর্ব শেষ করা উচিত। মান অভিমান এর কারণে যতটুকু সময় নষ্ট করবেন ততটুকুই হারাবেন।
ছোট ছোট অভিমান ভালোবাসা বাড়ালেও অভিমান দীর্ঘস্থায়ী হলে সম্পর্কের মধ্যে ভাঙ্গন ধরতে পারে। আমার কাছে মনে হয় ভালোবাসা হলো অনেক টা শ্বাস প্রশ্বাসের মতো, ঠিকমত চললেই সুস্থ থাকা যায়।
ফারুক আহমেদ।


Tuesday, March 22, 2022

পরিবার


সাগর পাড়ে আসলে কিছু সময়ের জন্য হলেও একদম চিন্তা মুক্ত জীবন উপভোগ করা যায়। ভুলেই যাই আমারও দায়িত্ব আছে!
কিন্তু কথায়ই তো আছে বাস্তবতা বড়ই নির্মম। পর মুহূর্তেই চোখের সামনে ভেসে উঠে পরিবারের প্রত্যেকটি মুখ। মনে করিয়ে দেয় পরিবারের সবাই পাশে থাকলে কতই না মধুর লাগতো।
আসল কথা হলো আকাশের যাই, পাতালেই যাই আর সাগর সহ যেখানেই নাই কেন পরিবার থেকে দূরে থাকার কোন উপায় নেই। পরিবার হলো চির দিনের ভালোবাসার জায়গা। যেখানে ভালোবাসলে ভালোবাসা আরও বেড়ে যায় সেটাই হলো পরিবার।
পরিবার হলো গ্রামীণ ফোনের বিজ্ঞাপনের মতো যতই দূরে থাকি তবুও যেন কাছে।
একজন আদর্শ মানুষের ভিত্তিও এই পরিবারেই গড়ে উঠে। পরিবার হলো এমন এক জায়গা, এখানে যাই চাষ করবেন তাতেই সোনা ফলবে।
অভাব, অনটন, সুখ,দুঃখ, হাসি খুশি সব কিছুই পরিবারের সবাই সানন্দে শেয়ার করে। দূর থেকে দেখলে মনে হবে এটা যেন যার যার নিজস্ব দায়িত্ব।
সব চেয়ে বড় কথা হলো পরিবার নিয়ে ব্যাখ্যা করে শেষ করা যাবে না। কারণ পরিবার হলো সব কিছুর উর্ধ্বে।
আমি শুধু এই টুকুই বলতে চাই আমি এমন এক হাসি খুশি পরিবারের সদস্য হয়ে আমৃত্য পাশে থাকতে চাই ইনশাল্লাহ।
ফারুক আহমেদ।



Sunday, March 13, 2022

নদী ও মানুষ


বাংলাদেশ নদীমাতৃক দেশ এবং সেই সাথে জনবহুল দেশও বটে। 


আমার কাছে মাঝে মাঝে মনে হয় নদীর সাথে মানুষের অনেকাংশেই মিল খুঁজে পাওয়া যায়। 


▪️পরিবেশ যদি শান্ত থাকে নদীর পানিও  শান্ত থাকে ঠিক তেমনই মানুষ যদি সুখে থাকে তবে মানুষের জীবনও ঠিক শান্ত নদীর মত থাকে।


▪️প্রকৃতিতে ঝড় আসলে নদীতে প্রচন্ড ঢেউ উঠে ঠিক তেমনই মানুষের জীবনেও যদি ঝড় আসে তখন কষ্টের শিহরনের ঢেউ খেলে যায় সারা শরীর জুড়ে। 


▪️নদীর ক্ষেত্রে যেমন এক পাড় থেকে দাঁড়িয়ে অন্য পাড় কে সুন্দর মনে হয় ঠিক তেমনই মানুষের বেলাতেও মনে হয় আমি ছাড়া বাকি সবাই সুখি। 


▪️নদীর সৌন্দর্য যেমন বর্ণনা করে শেষ করা যাবে না ঠিক তেমনই মানুষের রুপেরও শেষ নেই।


▪️নদীতে যখন জোয়ার আসে তখন নদী কানায় কানায় পানিতে ভর্তি থাকে। নদীর আসল সৌন্দর্য তখনই প্রকাশ পায়। ঠিক তেমনই মানুষের বেলাতেও যৌবন কালেই সর্বোচ্চ সৌন্দর্য ফুটে উঠে। 


▪️নদী শুকিয়ে গেলে মরা মনে হয় ঠিক তেমনই মানুষের প্রাণ পাখি উড়ে গেলেই মৃত লাশ ছাড়া আর কিছুই নয়।


▪️নদী শুকিয়ে গেলেও যেমন দাগ থেকে যায় ঠিক তেমনই মানুষের বেলাতেও মরার পরে কর্মের কর্মফল থেকে যায়।


▪️নদীর যেমন শাখা আছে তেমনই মানুষেরও বংশধর আছে।


▪️নদী যেমন ছুটে চলে অবিরাম মানুষের বেলাতেও ঠিক তাই।


▪️নদীর যেমন এক পাড় ভেঙে আরেক পাড় গড়ে মানুষের বেলাতেও সুখ আসলে দুঃখ পালায় আর দুঃখ আসলে সুখ পালায়।


▪️নদীতে যেমন হরেক রকম প্রাণী বাস করে মানুষের ভেতরেও বহু  মানুষরুপী অমানুষও বাস করে।


এত কিছুর পরে আপনি একবার ঠান্ডা মাথায় ভেবে দেখুন সত্যিই নদীর সাথে মানুষের কত মিল খুঁজে পাওয়া যায়।!


ফারুক আহমেদ।

Saturday, March 12, 2022

নিজেকে আবিষ্কারের কৌশল


 যদি নিজেকে নতুন করে  আবিষ্কার করতে চান তবে নিম্নোক্ত বিষয়গুলোর দিকে বিশেষ সুনজর দিতে হবে কোন প্রকার দ্বিধাদ্বন্দ্ব ছাড়াই। 


▪️এক চোখা নীতি পরিহার করতে হবে।


▪️অন্যের কথা মনোযোগ সহকারে শোনার অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে।


▪️রাগের মাথায় কোন সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত হবে না।


▪️কারো সাথে কোনো প্রকার ভুল বোঝাবুঝি হলে কমপক্ষে তিন দিন অপেক্ষা করে পুনরায় ভুল অবসানের চেষ্টা করতে হবে। আর তখন যে সিদ্ধান্তই হবে তা মেনে নিয়ে এগিয়ে যেতে হবে।


▪️কথায় কথায় রাগ করা তো দূরে থাক, বরং রাগকেই প্রশ্রয় দেওয়া যাবে না।


▪️নিজের ভেতর ধৈর্যের পাহাড় গড়ে তুলতে হবে।


▪️নিজের তথ্য ভাণ্ডার কে হরেক রকম তথ্য দ্বারা পূর্ণ করতে হবে।


▪️জানার কোন শেষ নাই এরকম মানসিকতা সবসময়ই থাকতে হবে।


▪️জ্ঞান অর্জনের জন্য বয়স কোন বিষয় নয় । তাই বয়স যেন বাধা হয়ে না দাঁড়ায় সে নজর রাখতে হবে।


▪️সময়ের গুরুত্ব অনুধাবন করতে হবে।


▪️কথার সাথে কাজের মিল থাকতে হবে। সেই সাথে কারো সঙ্গেই কথার বরখেলাপ করা যাবে না।


▪️নিজের চরিত্রের উপর দাগ লাগবে এমন কোন কাজ করা যাবে না।


▪️নিজের ভেতর অজানা কে জানার আগ্রহ থাকতে হবে। 


▪️সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো জ্ঞান অর্জনের ক্ষুধা থাকতে হবে।


এক কথায় যার বৈশিষ্ট্য নিয়ে উদাহরণ দেওয়া যায় সেই তো অসাধারণ। আর এই রকম অসাধারণ কিছু পাইতে গেলে আপনার বৈশিষ্ট্য অন্যের থেকে অনেক ভাল ও ভিন্নতর হতে হতে হবে। তবেই তো ধীরে ধীরে আপনি একজন আইডল হয়ে গড়ে উঠবেন।


ফারুক আহমেদ।

জীবনের গতি পথ সুখেও বদলে যায় আবার দুঃখেও বদলে যায়। গতি পথ বদলানোর কারিগর স্বয়ং নিজেই। যার যার কর্ম অনুযায়ী গতিপথ তৈরি হয়। রাস্তা যদি ভাল হয় তখন যানবাহন চলাচল হয় ইচ্ছা মাফিক গতিতে। খুব একটা বেগ পেতে হয় না। আবার রাস্তা যদি সরু হয় তখন যান জটে জীবন থেকে অনেক সময় এমনিতেই নষ্ট হয়ে যায়। এজন্য জীবনের গতিপথ সাজাতে হয় পরিকল্পনা মাফিক। পরিকল্পনা যত নিখুঁত হবে গতিপথ তত মসৃণ হবে।
ফারুক আহমেদ।

Friday, March 4, 2022

বিপদ যখন গ্রাস করে তখন পালানোর পথ বন্ধ হয়ে যায়। কথায়ই তো আছে ভাবিয়া করিও কাজ করিয়া ভাবিও না। অলসতা অনেকটা আমাদের জাতীয় সমস্যার মতন, সারাক্ষণ লেগেই আছে। কিছুতেই পিছু ছাড়তে চায় না। আমরা জানি অলস মস্তিষ্ক শয়তানের কারখানা তবুও অলসতায় পড়ে সচেতন হতে মন চায় না। বেশিরভাগ মানুষের ক্ষেত্রেই অলসতার কারণে কর্ম চাঞ্চল্য বাধাগ্রস্থ হয়। জীবনের সৌন্দর্য উপভোগ করার জন্য কর্ম করতে হয়। কর্ম যদি ভাল হয় তবে জীবন খুবই উপভোগ্য হবে। আর অন্যথায় টেনে টুনে কোন রকমে জীবন ধারণ করার সামিল। সব দিক থেকে চিন্তা করলে ভাল থাকা বা মন্দ থাকা দুটোই নিজের উপর নির্ভর করে। আমি যে দিকেই পা বাড়াবো সেই দিকের গন্তব্যের দেখাই পাবো। 
ফারুক আহমেদ।

হারানোর ভয় থাকলেই টেনশন মনের ভেতর বাসা বাঁধে ! জীবনটা প্রেমের কোন কবিতা বা গান নয় যে ইচ্ছেমতন আবৃতি বা গেয়ে যাব। যদ...